ইউরোপের বহু দেশ নারীকে প্রধানমন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট বা চ্যান্সেলর পদে বরণ করে নিলেও যুক্তরাষ্ট্র এখনো সেই তালিকায় নাম লেখাতে পারেনি। দেশটির স্বাধীনতার পর গত আড়াইশো বছরেও কোনো নারী প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি। পুরুষতন্ত্রই কী নারীদের জন্য সবচেয়ে বড় বাধা? এই লিঙ্গবৈষম্যের জন্যই কি এবারও কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ছিটকে পড়বেন?
গত মঙ্গলবার দ্য কনভারসেশন একটি নিবন্ধ প্রকাশ করে। ইউনিভার্সিটি অব অ্যাডিলেডের রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ক্যারল জনসন। নিবন্ধের শুরুতেই তিনি লেখেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে একজন নারী প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর ক্ষেত্রে লিঙ্গের বিষয়টি অনিবার্যভাবে আসবে। তুলনামূলক বেশিসংখ্যক নারী ভোটার কমলাকে সমর্থন করছেন; বেশিসংখ্যক পুরুষ ভোটার ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়েছেন। মার্কিনিরা মনে করেন, শক্তিশালী পুরুষ নেতৃত্ব দেশের মানুষকে শারীরিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারে।
গত বুধবার প্রকাশিত ফোর্বসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কমলা হ্যারিস যখনই নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এসেছেন, তখন থেকে গণমাধ্যম বলে আসছে– ফলাফলে নির্ণায়ক ভূমিকায় থাকবে ‘লিঙ্গ বিভাজন’। লিঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাঠে একেবারেই কেন্দ্রীয় একটি শক্তি।
১৭৭৬ সালে যুক্তরাজ্যের কবল থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে যুক্তরাষ্ট্র। ২৪৮ বছর পার হয়েছে। তবে এখনো কোনো নারী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি। এমনকি স্বাধীনতার প্রায় দুইশ বছর পর একজন নারী কেবল প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েছেন। সেটি ১৯৬৪ সালের ঘটনা। তিনি ছিলেন মার্গারেট চেস স্মিথ।
এরপর ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম নারী প্রার্থী হন হিলারি ক্লিনটন। সাবেক ফার্স্ট লেডি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দক্ষতার পরিচয় দেওয়ায় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হন তিনি। ৩০ লাখের বেশি পপুলার ভোট পেয়েও ইলেক্টোরাল কলেজের নিয়মে পরাজিত হন ট্রাম্পের কাছে। দেখা যায়, ট্রাম্প পুরুষ ভোট পান ৫২ শতাংশ আর হিলারি পান ৪১ শতাংশ। এবারও সবশেষ জরিপে দেখা যাচ্ছে, পুরুষ ভোটারদের কাছে কমলার চেয়ে ট্রাম্পই জনপ্রিয়।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, সব যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও কেবল নারী হওয়ায় বিদ্বেষের শিকার হন হিলারি। তবে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে নারী নেতৃত্বকে মেনে নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। তার প্রমাণ, এরই মধ্যে ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে রেকর্ড করেছেন কমলা। তবে এবার দেখার বিষয় মার্কিন পুরুষেরা কমলাকে ভোট দেবেন কিনা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
0 Comments